২৪ দিন পর তামাবিল স্থল বন্দর দিয়ে আমদানি শুরু

টানা ২৪ দিন বন্ধ থাকার পর মঙ্গলবার থেকে সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে পাথর আমদানি শুরু হয়েছে।

আমদানিকৃত পণ্য পরিমাপে অটো এসএমএস সফটওয়্যার পদ্ধতি চালুর প্রতিবাদে গত ৭ জানুয়ারি থেকে আমদানি বন্ধ করে দিয়েছিলেন আমদানিকারকরা। তবে মঙ্গলবার থেকে পরীক্ষামূলকভাবে অটো এসএমএস সফটওয়্যার পদ্ধতিতে (যা ডিজিটাল পদ্ধতি নামে পরিচিত) ওজন পরিমাপের মাধ্যমেই আমদানি কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে মূলত ভারত থেকে কয়লা ও পাথর আমদানি হয়। তবে ভারতের পরিবেশ আদালতের আপত্তিতে কয়লা আমদানি অনেকদিন ধরেই বন্ধ রয়েছে। আর পাথর আমদানি বন্ধ হয়ে পড়ায় ২৪ দিন ধরে অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছিলো এ বন্দর।

জানা যায়, সোমবার বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সাথে বৈঠক শেষে আমদানিকারক সমিতির নেতারা ডিজিটাল পদ্ধতিতে আমদানি শুরু করতে সম্মত হন।

এরপর মঙ্গলবার থেকে পাথর আমদানি শুরু হয়। বিকেল পর্যন্ত শতাধিক পাথরবাহী ট্রাক পাথর নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে।

তামাবিল স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী নেতারা জানান, সোমবার বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের সাথে ঢাকায় বৈঠক হয় তাদের। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ি অটো এসএমএস বা ডিজিটিাল পদ্ধতিতে পরীক্ষামূলকভাবে আমদানি শুরু করতে সম্মত হন তারা। যার প্রেক্ষিতে পরীক্ষামূলক ভাবে অটোএসএমএস পদ্ধতিতে মঙ্গলবার সকাল থেকে ব্যবসায়ীরা আমাদানি কার্যক্রম শুরু করেন।

এই পদ্ধতিতে আমদানি রপ্তানির বিষয়টি সরজমিন পর্যবেক্ষণ করতে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (ট্রাফিক) মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর কবীর এর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল তামাবিল স্থলবন্দরে অবস্থান করছেন। তারা আমদানি রপ্তানির বিষয়টি পর্যবেক্ষণ শেষে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন।

এ বিষয়ে তামাবিল স্থলবন্দরের পাথর, চুনা পাথর ও কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক সরোয়ার হোসেন ছেদু জানান, স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত মোতাবেক পরীক্ষামূলক ভাবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে আমদানি রপ্তানি কার্যক্রম চালু করা হলেও এই পদ্ধতিতে ধীরগতি ও ডাউকির সাথে পণ্য পরিমাপের ক্ষেত্রে ওজনে তারতম্যের কারণে ব্যবসায়ীদের লোকসান গুণতে হবে।

আগের মতো পণ্য আমদানি-রপ্তানি চালু করতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আমরাও চাই ডিজিটালাইজেশন হোক। তবে, ডাউকি স্থলবন্দরের কাজ শেষ হওয়ার পর একসঙ্গে দুই দেশে তা চালু হলে ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্থ হবে না আর সরকারও সঠিক রাজস্ব পাবে।

তামাবিল স্থলবন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা আশিকুর রহমান জানিয়েছেন, আমদানি কার্যক্রম বন্ধ থাকায় শুধু বন্দর ট্যারিফ বাবদ প্রতিদিন সরকারের ১২ থেকে ১৫ লাখ টাকা এবং রাজস্ব বাবদ আরও প্রায় ৩০ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে। এতে করে গত ২৪ দিন ধরে আমদানি রপ্তানি বন্ধ থাকায় সরকার প্রায় ১০-১২ কোটি টাকা রাজস্ব বঞ্চিত হয়েছে।

তামাবিল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম ভূঁঁইয়া জানান, বন্দর সচল থাকলেও ডিজিটাল পদ্ধতি চালুর প্রতিবাদে ব্যবসায়ীরা আমদানি বন্ধ রেখেছিলেন। আজ থেকে ডিজিটাল পদ্ধতিতেই পূণরায় আমদানি শুরু করেছেন তারা। আর এই পদ্ধতিতে আমদানি রপ্তানির বিষয়টি সরজমিন পর্যবেক্ষণ করতে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (ট্রাফিক) মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর কবীর এর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল তামাবিল স্থল বন্দরে অবস্থান করছেন। তারা এখানে দুই তিন দিন অবস্থানের পর ডিজিটাল পদ্ধতিতে আমদানি রপ্তানির বিষয়টি পর্যবেক্ষণ শেষে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন।

উল্লেখ্য, ভারত থেকে আসা পণ্য সেখানকার ডাউকি স্থলবন্দরে ফিতা দিয়ে পরিমাপ করা হয়।  তামাবিল বন্দরে প্রবেশের পর একই পদ্ধতিতে পরিমাপ হতো। গত ৭ জানুয়ারি থেকে তামাবিল স্থলবন্দরে অটোএসএমএস পদ্ধতি চালু করা হয়। এই পদ্ধতি চালুর প্রতিবাদে ওইদিন থেকেই আমদানি কার্যক্রম বন্ধ করে দেন ব্যবসায়ীরা।

সূত্রঃ সিলেটটুডে২৪

 

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *