সিলেটে যানজট নিরসনে ১ জানুয়ারি থেকে রিকশা চলাচল বন্ধ, প্রতিবাদ

বিয়ানীবাজারের ডাক ডেস্কঃ

সিলেট নগরের কেন্দ্রস্থলের জিন্দাবাজার-বন্দরবাজার এলাকায় রিকশা, ভ্যান ও ঠেলাগাড়ি চলাচল আগামী ১ জানুয়ারি থেকে বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যানজট নিরসন ও সড়ক নিরাপত্তায় এ সিদ্ধান্ত মেনে চলতে সিলেট সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ মাইকিং করে প্রচার চালিয়েছে। তবে এ সিদ্ধান্তকে জনস্বার্থবিরোধী বলছে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)।

সিটি করপোরেশনের একটি সূত্র জানায়, জিন্দাবাজার-বন্দরবাজার থেকে চৌহাট্টা মোড় পর্যন্ত সড়কটি একমুখী (ওয়ানওয়ে) যান চলাচল থাকলেও সম্প্রতি সড়ক বিভাজক স্থাপন করে দ্বিমুখী যান চলাচলের ব্যবস্থা করে সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। সড়ক বিভাজকের সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ এখনো চলছে। জিন্দাবাজার-বন্দরবাজার সড়ক এলাকায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধসহ সরকারি ও বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা আছে। এ ছাড়া নগরের প্রধান প্রধান বিপণিবিতানগুলোও জিন্দাবাজারসহ আশপাশের এলাকায় অবস্থিত। পুরো এলাকার বৈদ্যুতিক খুঁটি অপসারণ করে ভূগর্ভস্থ বিদ্যুৎ সরবরাহ করে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড। এসব উন্নয়ন কার্যক্রম শেষে পুরো এলাকাকে নগরীর একটি আদর্শ এলাকায় রূপান্তর করার পরিকল্পনায় যানবাহন চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। ১ জানুয়ারি থেকে জিন্দাবাজার-বন্দরবাজার এলাকায় রিকশা, ভ্যান ও ঠেলাগাড়ি চলাচল বন্ধ রাখার বিষয়টি মঙ্গলবার থেকে মাইকিং করে প্রচার করা হয়।

কেন্দ্রস্থলের এলাকাগুলোতে ছোট ছোট যানবাহন চলাচল বন্ধের পরিকল্পনা ট্রাফিক পুলিশকে নিয়েই হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, যানজট নিরসনসহ বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর নিরাপদ চলাচলের জন্য ১ জানুয়ারি থেকে এ পরিকল্পনা কার্যকর করা হবে। এতে নাগরিকদের ভোগান্তি নয়; বরং সুবিধার বিষয়টি বেশি করে বিবেচনা করা হয়েছে। এরপরও ছোট ছোট যানবাহনের জন্য বড় কোনো ভোগান্তি বা সমস্যার সৃষ্টি হলে, তা তাৎক্ষণিকভাবে সমাধানে সতর্ক দৃষ্টি থাকবে।

ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বাসদ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, রিকশা, ভ্যান ও ঠেলাগাড়ি চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ জনস্বার্থ পরিপন্থী। করোনায় বিপর্যস্ত শ্রমজীবীরা। রিকশা-ভ্যান চালিয়ে কোনোমতে জীবিকা নির্বাহ করে শ্রমজীবীদের একটি অংশ। এসব যান বন্ধ হলে শ্রমিকদের আয়-রোজগার কমে যাবে। কেন্দ্রস্থলের এলাকাগুলোতে কায়িক শ্রমিকেরা বেকারও হয়ে যাবেন, যা অমানবিক।

রিকশা চলাচল বন্ধ হলে সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীরা বেশি ভোগান্তির মুখে পড়বেন উল্লেখ করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, জিন্দাবাজার-বন্দরবাজার-চৌহাট্টা সড়কে অনেকগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের যাতায়াতের প্রধান বাহন রিকশা। ফলে ভোগান্তিতে পড়বেন এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে এসব এলাকার ছোট ও মাঝারি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *