সিলেটে বন্যার পূর্বাভাস, বোরো ধান কাটার পরামর্শ

বিয়ানীবাজারের ডাক ডেস্ক:

১৪ এপ্রিল ১লা বৈশাখ। মার্চের শুরু থেকে সিলেট জুড়ে হচ্ছে ঝড় বৃষ্টি। আবহাওয়া অফিস আগাম সর্তকবার্তা দিয়ে আসছে সিলেটে হতে পারে বন্যা। এ পূর্বাভাস পাওয়ার থেকে সিলেটে হাওর এলাকার মানুষের মধ্যে দেখা দিয়ে দিয়েছে ভয়-ভীতি। জেলা প্রশাসন থেকে ১৫ এপ্রিলের পর থেকে বোরো ধান কাটার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গত বছরের বন্যা গোটা সিলেট তছনছ করে দিয়েছে। সিলেটবাসীর বাড়ি ঘর, ফসলি জমিতে হয়েছে ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি। তলিয়ে গিয়েছি হাজার হাজার হেক্টর বোরো ধানের ক্ষেত।

এ বছর বোরো ধানের সার্বিক অবস্থা ও ক্ষেত থেকে ফসল কাটার পরিস্থিতি নিয়ে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে জানানো হয়, আগামী ১৫ এপ্রিল  থেকে জেলায় বোরো ধান কাটা শুরু হবে।

সভায় জানানো হয়, জেলায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ লক্ষ ২২ হাজার ৩০০ হেক্টর। চাষ হয়েছে ২ লক্ষ ২২ হাজার ৭৯৫ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪৯৫ হেক্টর বেশি। এই মুহূর্তে মাঠে বোরো ধান স্তর বুটিং (ধানের প্রাথমিক অবস্থা), দুধ অবস্থা এবং দানা অবস্থায় আছে। আগামী ১৫ এপ্রিল থেকে পুরোপুরিভাবে বোরো ধান কাটা শুরু হবে। মাঠে বর্তমানে ফসলের অবস্থা ভালো রয়েছে।

সভা সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন উপজেলায় ভর্তুকির আওতায় ৬৬৫টি সচল কম্বাইন হারভেস্টার আছে। এছাড়া এই মাসের মধ্যে আরও কিছু কম্বাইন হারভেস্টার ভর্তুকির মাধ্যমে কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।  বোরো ধান কাটতে সুনামগঞ্জ জেলায় শ্রমিকের কোন সংকট হবে না। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে  বেশি ফলন পাওয়ার আশা প্রকাশ করেন কর্মকর্তারা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুনামগঞ্জ জেলার উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম জানান, বিভিন্ন উপজেলায়  দেশি প্রজাতির কিছু ধান কাটা ইতোসমধ্যে শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় পাঁচ হেক্টর জমির দেশি ধান কাটা হয়েছে। আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে জেলার সব হাওরে পুরোদমে ধান কাটা শুরু হবে।

কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, জেলায় প্রায় পৌনে ৪ লাখ কৃষক পরিবার রয়েছে। চলতি বছর সুনামগঞ্জ ১ হাজার ৩৭০ হেক্টর জমিতে দেশি ধান আবাদ হয়েছে। সব মিলিয়ে এবার জেলায় ২ লাখ ২২ হাজার ৩০০ হেক্টর  বোরো জমির লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে আবাদ হয়েছে ২ লাখ ২২ হাজার ৭৯৫ হেক্টর। যা থেকে প্রায় ১৩ লাখ ৫৩ হাজার মেট্রিক টন ধান উৎপাদিত হবে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৩ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।

শুধু সুনামগঞ্জ নয়, এ কার্যক্রম সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জে চালু হবে এক যুগে। কৃষদের লক্ষ্য উদ্দেশ্যে হচ্ছে বন্যা পরিস্থিতির আগে যেন বোরো ধান ঘরে তুলতে পারেন। কৃষকদের পাশা পাশি কৃষি বিভাগ ও জেলা প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।

 

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *