আমেরিকায় থেকেও গোলাপগঞ্জে শিক্ষকতা করেন জেসমিন!

বিয়ানীবাজারের ডাক ডেস্কঃ

যুক্তরাষ্ট্রে বসে প্রায় পাঁচ বছর ধরে চাকরি করছেন সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ রায়গড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সৈয়দা জেসমিন সুলতানা। শুধু তাই নয়, ব্যাংক থেকে নিয়মিত বেতনও তুলছেন তিনি।

বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয়ের সদ্য অনুমোদিত ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আজিজুর রহমান খান সিলেট বিভাগীয় শিক্ষা অফিসের উপ-পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগ ও বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২১ এপ্রিল সৈয়দা জেসমিন সুলতানা রায়গড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। এক বছর নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকলেও এরপর ২০১৫ সালের ১২ নভেম্বর থেকে পাঁচ বছর ধরে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন। কিন্তু নিয়মিত বেতনের টাকা উত্তোলন করে আসছেন তিনি। ২০১৭ সালের ১৫ জানুয়ারি ও ২০১৮ সালের ৫ সেপ্টেম্বর তারিখে জেসমিন সুলতানা সোনালী ব্যাংকের ঢাকা দক্ষিণ শাখা থেকে মোট চার লাখ টাকা উত্তোলন করেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

এদিকে অভিযোগের পর জেলা শিক্ষা অফিস থেকে বিষয়টি তদন্ত করার জন্য বিয়ানীবাজার উপজেলা শিক্ষা অফিসার রুমান মিয়াকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিদ্যালয়টিতে সরেজমিনে তদন্ত করেন।

এ বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা রুমান মিয়া বলেন, বিদ্যালয়ে গিয়ে সংশ্লিষ্ট সব শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিসহ সদস্যদের বক্তব্য শুনেছি। এছাড়া বিদ্যালয়ের খাতাপত্র দেখেছি। প্রধান শিক্ষক সৈয়দা জেসমিন সুলতানা বিদ্যালয়ে যে অনুপস্থিত তার সত্যতা পাওয়া গেছে। শিগগিরই এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে।

জেসমিন সুলতানা এখন কোথায় আছেন বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য তার বড় ভাই রায়হান আহমদের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, জেসমিন সুলতানা স্বামীর আবেদনের প্রেক্ষিতে ভিসা পেয়ে সপরিবারে যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন। বর্তমানে তিনি সেখানে বসবাস করছেন।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আজিজুর রহমান খান জানান, বিদ্যালয়ের সংরক্ষিত তথ্যমতে প্রধান শিক্ষিকা সৈয়দা জেসমিন সুলতানা ২০১৩ সালে যোগদান করার পর থেকে মাঝে-মধ্যে স্কুলে আসতেন। তিনি প্রতিষ্ঠানের কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, হাজিরা খাতা ও স্লিপের টাকা নিয়ে প্রায় পাঁচবছর স্কুলে আসেন না। শুনেছি সপরিবারে যুক্তরাষ্ট্রে আছেন। তবে ২০১৭ সালে এসে ব্যাংক থেকে সরকারি বেতন উত্তোলন করার সময় কয়েকদিন বিদ্যালয়ে এসেছিলেন।

এ ব্যাপারে এ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিয়তি রাণী চন্দের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, প্রধান শিক্ষক অনুপস্থিতির বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে অনেক আগে জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে গোলাপগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিসার দেওয়ান নাজমুল আলম বলেন, জেসমিন সুলতানা কয়েক বছর আগে তৎকালীন শিক্ষা অফিসারের কাছ থেকে তিনমাসের চিকিৎসাজনিত ছুটি নিয়েছিলেন। এখন তিনি কোথায় আছেন আমার জানা নেই।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *