ক্ষমতা শেখ মুজিবের হাতে দেওয়া উচিত : ভাসানী

বিয়ানীবাজারের ডাক ডেস্ক:

অগ্নিঝরা মার্চের ২১তম দিন আজ। ১৯৭১ সালের ২১ মার্চ ছিল রোববার। এদিন সকালে জাতীয় পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রেসিডেন্ট ভবনে ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে পঞ্চম দফা বৈঠকে মিলিত হওয়ার আগে তার নিজ বাসভবনে বিশিষ্ট আইনজীবী এ কে রোহির সঙ্গে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনায় মিলিত হন। প্রেসিডেন্টের সঙ্গে পঞ্চম দফা বৈঠকের সময় প্রাদেশিক আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদ বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ছিলেন।

আগের দিন মুক্তিপাগল হাজার হাজার মানুষের দৃপ্ত পদচারণায় রাজধানী ঢাকা অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। সর্বস্তরের মানুষের সম্মিলিত মিছিল ‘জয় বাংলা’, ‘জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান তুলে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার অভিমুখে এগিয়ে চলে। সেখানে মুক্তি অর্জনের শপথ নিয়ে মিছিল যায় বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে।

বিকালে চট্টগ্রামে ন্যাপের প্রধান মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী পোলো গ্রাউন্ডে এক বিশাল জনসভায় বলেন, আলোচনায় ফল হবে না। এদেশের হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি থেকে চাপরাশি পর্যন্ত যখন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়াকে মানে না, তখন শাসনক্ষমতা শেখ মুজিবের হাতে দেওয়া উচিত।

পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী ভুট্টো বিকালে সদলবলে করাচি থেকে ঢাকায় আসেন। ভুট্টোর আগমন উপলক্ষ্যে ঢাকার তেজগাঁও বিমানবন্দরে সেনা মোতায়েন করা হয়। সাংবাদিকদের বিমানবন্দরে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়। ভুট্টোকে বিমানবন্দর থেকে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে নিয়ে আসার সময় রাস্তার দুই পাশের পথচারীরা ভুট্টোবিরোধী স্লোগান দেয়।

সন্ধ্যায় জুলফিকার আলী ভুট্টো কড়া সেনা প্রহরায় প্রেসিডেন্ট ভবনে যান। সেখানে ভুট্টো দুই ঘণ্টারও বেশি সময় প্রেসিডেন্টের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে মিলিত হন।

প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক শেষে হোটেলে ফিরেই ভুট্টো তার উপদেষ্টাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। এর আগে হোটেল লাউঞ্জে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের ভুট্টো বলেন, এই মুহূর্তে আমি এটুকু বলতে পারি যে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। ভুট্টো সাংবাদিকদের আর কোনো সময় না দিয়ে সরাসরি লিফটে চড়েন। সাংবাদিকরা তার সহগামী হতে চাইলে ভুট্টোর ব্যক্তিগত প্রহরীরা অস্ত্র উঁচিয়ে বাধা দেয়।

১৯ মার্চ জয়দেবপুরে জারীকৃত কারফিউ দুপুর ১২টায় ৬ ঘণ্টার জন্য প্রত্যাহার করা হয়। পরে সন্ধ্যা ৬টায় অনির্দিষ্টকালের জন্য পুনরায় কারফিউ বলবৎ করা হয়।

বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন ২৩ মার্চ প্রতিরোধ দিবসের কর্মসূচির প্রতি তাদের সমর্থন ঘোষণা করে। মগবাজারে মহিলা সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এক মহিলা সমাবেশে সেনাবাহিনীর সাবেক বাঙালি সৈনিকদের নিয়ে একটি প্যারামিলিটারি গঠনের আহ্বান জানানো হয়।

সুত্র : যুগান্তর

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *