সিলেটে করোনা হাসপাতালে তিল ধারনের জায়গা নেই!

সিলেটে ভয়াবহভাবে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। নমুনা পরীক্ষায় প্রতিদিন শতাধিক আক্রান্ত সনাক্ত হলেও কোথাও কেউ মানছে না স্বাস্থ্যবিধি।

এ অবস্থা চলতে থাকলে করোনা সংক্রমণ আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এদিকে, প্রতিদিনই সিলেটের করোনা ডেটিকেটেড শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে বাড়ছে রোগী। রোগীদের চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের। একশত শয্যার হাসপাতালের পুরোটিই প্রায় রোগীতে ভরে গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সিলেটে করোনা সংক্রমণ বেশ কমে এসেছিল। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই ছিল। সিলেটের তিনটি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষায় আক্রান্ত সনাক্তের সংখ্যা দুই অংকের নিচে ছিল। কিন্তু ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহ থেকে বাড়তে থাকে সংক্রমণ। আর মার্চের শেষে তা রূপ নেয় ভয়াবহ। প্রতিদিনই শতাধিক আক্রান্ত সনাক্ত হচ্ছেন। বাড়তে থাকে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা। একই সাথে মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়তে থাকে। গেল ২৪ ঘন্টায় একদিনে সিলেট বিভাগে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান ৫ জন। আর এর সাথে বিভাগে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ২৯০ জনে।

সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য অফিস সূত্র জানায়, চিকিৎসা সুবিধা বেশি থাকায় সিলেট বিভাগের প্রতিটি জেলা থেকেই আক্রান্তরা এসে শহিদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে ভর্তি হতে চান। ফলে সংক্রমণ বাড়ার সাথে সাথে হাসপাতালটিতে দিন দিন রোগীর চাপ বাড়ছে। সূত্র জানায়, ১০০ শয্যার হাসপাতালটিতে ৮৪টি সাধারণ বেড ও ১৬টি আইসিইউ বেড রয়েছে। এর মধ্যে নষ্ট রয়েছে আইসিইউ’র ৫টি বেড। গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ওই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ৮১ জন রোগী। এর মধ্যে সাধারণ ওয়ার্ডে ৭০ জন ও আইসিইউতে ১১ জন ছিলেন।

হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. জন্মেজয় দত্ত জানান, প্রতিদিনই হাসপাতালে আসা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আইসিইউ বিভাগে কোন সিট খালি নেই।

সাধারণ ওয়ার্ডে হাতেগোনা কয়েকটি সিট খালি থাকলেও তা আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যেই পূর্ণ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এরপর রোগী আসলে অন্য হাসপাতালে পাঠানো ছাড়া কোন উপায় থাকবে না। ডা. জন্মেজয় দত্ত আরও জানান, আগে হাসপাতালে যেসব রোগী আসতেন, তারা কয়েকদিন চিকিৎসা নেয়ার পরই সুস্থ হয়ে ওঠতেন। এখন রোগীদের অবস্থা হঠাৎ করে খারাপ হয়ে যাচ্ছে। শরীরের মধ্যে সংক্রমণ দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। হাসপাতালে ভর্তির কয়েক ঘন্টার মধ্যে রোগীর ফুসফুসের সংক্রমণ বেড়ে যাচ্ছে। সাথে সাথে তাকে আইসিইউতে নেয়ার প্রয়োজন পড়ছে।

এদিকে, করোনা সংক্রমণ বাড়লেও সিলেটে কোথাও স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই নেই। রাস্তাঘাট, বিপণীবিতান সবখানেই মানুষ মাস্ক ছাড়াই চলাফেরা করছে।

স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে প্রশাসনের অভিযানও স্থিমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার সিলেটের ব্যবসায়ীদের নিয়ে সভা করেছে প্রশাসন। সভায় রাত ৮টা পর্যন্ত দোকানপাঠ ও বিপণীবিতান খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. প্রেমানন্দ মন্ডল।

সূত্রঃসিলেটভিউ২৪

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *