বিয়ানীবাজারে ‘চিকিৎসা ব্যবসা’য় নতুন রীতি: রিপোর্ট দেখতেও ফি!

মফস্বল শহর বিয়ানীবাজারে চিকিৎসা সেবা নিয়ে হয়রানী-অভিযোগের শেষ নেই। চিকিৎসা ব্যবসা’র জন্য প্রসিদ্ধ এই এলাকায় চিকিৎসকদের নানামুখি ব্যবসার মুখরোচক গল্প খোদ রাজধানীতেও আলোচিত হচ্ছে। প্রতিদিন নিয়মিত অন্তত: ৬০জন চিকিৎসক পৌরশহরসহ উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় রোগী দেখেন।

এছাড়া সপ্তাহের বিভিন্ন দিনে ঢাকা এবং সিলেটের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের ঠাঁই দিতে রীতিমত হিমশিম খেতে হয় সংশ্লিষ্টদের। সপ্তাহের প্রতি বৃহস্পতিবার চিকিৎসকদের প্রচারনার ‘সু-খবর’ মাইকযোগে এতবেশী প্রচারিত হয় যে-অন্য জরুরী প্রচারনা আর কেউ শুনতে পায়না। স্থানীয় চিকিৎসা ব্যবসায় এমন নৈরাজ্যের মধ্যে নতুন করে আলোচিত হচ্ছে রোগ নির্নয়ে করা পরীক্ষার রিপোর্ট দেখতে ফি’ আদায়ের বিষয়টি। এটি এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

জানা যায়, গাইনী বিশেষজ্ঞ ডা. অসীম কুমার সাহা (এমবিবিএস, এফসিপিএস) বিয়ানীবাজার পৌরশহরের একটি ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে প্রতি বৃহস্পতি ও শুক্রবার রোগী দেখেন। গত ফেব্রæয়ারী থেকে তিনি রোগী প্রতি ৮শ’ টাকা হারে পরামর্শ ফি’ আদায় করছেন। পরামর্শের জন্য ২য় সাক্ষাতে নেন ৫শ’ টাকা। দুই সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট দেখাতে নেন আরো ২শ’ টাকা। ডা. অসীম মূলত: গাইনী রোগী দেখেন। এসব রোগীর ক্ষেত্রে আলট্রাসনোগ্রাফী পরীক্ষা অনেকটা বাধ্যতামূলক। এক্ষেত্রে রোগী প্রতি ডা. অসীম পরামর্শ ফি, পরীক্ষার কমিশন এবং রিপোর্ট দেখার ফি’ বাবদ আদায় করছেন ১২শ’ টাকা।

সাধারণ রোগীর অভিভাকরা জানান, গাইনী রোগীরা একজন ডাক্তারের কাছে গিয়ে যদি এত টাকা খরচ করতে হয়, তাহলে চিকিৎসা এখন সেবা নয় ব্যবসায় পরিনত হয়েছে। গরীব রোগীরা এত টাকা খরচ করে চিকিৎসা সেবা কি রকম পাবে-বলেও জানান তারা। ডা. অসীম কয়েকবছর পূর্বে বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি অন্যত্র বদলী হয়েছেন। গাইনী চিকিৎসক হিসেবে তার সুনাম রয়েছে। তবে ফি’ আদায়ের এমন রীতিতে বিস্মিত বিয়ানীবাজারের মানুষ।
বিষয়টি জানতে ডা. অসীম কুমার সাহার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে সন্ধ্যা ৭টা ৫ মিনিটে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।

তবে ডা. অসীমের রোগী দেখার চেম্বার সেন্ট্রাল মেডিকেয়ার সার্ভিসেস এর পরিচালক কমরেড আনিসুর রহমান জানান, ডাক্তার সাহেবের চেম্বারের বাইরে এমন একটি রেইটশিট টানানো আছে। তবে কনসালটেন্সি সংক্রান্ত সকল ফি’ তারাই নেন। এক্ষেত্রে আমাদের করার কিছু নেই।

 

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *