বিয়ানীবাজারে চাহিদামত পশু বিক্রি না হওয়ায় মৌসুমী ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত

বিয়ানীবাজারের ডাকঃ

লাভের আশায় খামারি ও বিয়ানীবাজারের মৌসুমী ব্যবসায়ীরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে গরু এনে জড়ো করেছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল কোরবানীর পশুর হাটে বিক্রি করে কিছুটা মুনাফা করা। কিন্তু ঈদের আগের দিন বিকেলে থেকে হঠাৎ করে গরুর দাম কমতে থাকায় হতাশ হয়েছে এসকল ব্যবসায়ীদের। দাম ও ক্রেতা কম থাকায় বিক্রি হয়নি হাজারো পশু। যেগুলো চাঁদরাতেই স্থানীয় খামারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন জেলাগুলো থেকে অসংখ্য খামারি ও মৌসুমী ব্যবসায়ী কয়েক হাজার পশু বিক্রির জন্য এনেছিলেন বিয়ানীবাজারের বিভিন্ন হাটে। করোনাভাইরাসের প্রভাবে মানুষের অর্থ সংকট থাকায় অনেকেই এবার কোরবানি দেননি। এজন্য গরুর চাহিদা কম ছিল। ফলে উপজেলার পশুর হাটগুলোতে অর্ধেক গরুও বিক্রি হয়নি।

এর আগে এত গরু কখনও স্থানীয় খামারে ফেরত যায়নি। ঈদের দিন সরজমিন অনেক খামার ঘুরে দেখা যায়, গরুতে ঠাসা খামারগুলো। এসব গরু নিয়ে খামারি ও ব্যবসায়ীরা পড়েছেন বিপাকে।

বুধবার স্থানীয় খামারি ও ব্যবসায়ীদের চোখে-মুখে ছিল হতাশা।

এদিকে ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে বাইরের জেলা থেকে গরু নিয়ে আসা পাইকাররা সকাল থেকে ট্রাকে করে এগুলো ফেরত নিয়ে যাচ্ছেন।

বুধবার দুপুরে কথা হয় একাধিক খামারি ও ব্যবসায়ীর সঙ্গে। এ সময় কুষ্টিয়া থেকে আসা ব্যবসায়ী সুজন বলেন, ‘১৪টি গরু বিয়ানীবাজারের পশুর হাটে নিয়েছিলাম। মাত্র তিনটি গরু বিক্রি হয়েছে। এবার গরুতে লাভ হয়নি, ক্ষতি হয়েছে। হাটে ক্রেতা ও দাম কম থাকায় বাকি ১১টি গরু বিক্রি করতে পারিনি। ট্রাক ভাড়া ও আমাদের খরচ ওঠেনি। গরু তো আর ফেলে দেওয়া যাবে না। এজন্য বাড়িতে ফিরিয়ে নিচ্ছি। স্থানীয় হাটে বিক্রি করবো।’

তিনি আরও বলেন, ‘পরিবারের সঙ্গে একত্রে ঈদ করার কথা ছিল। কিন্তু সেটা আর হলো না। গতকাল রাত থেকে এখন পর্যন্ত কিছু খাইনি।’

শহিদুল নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘১৪টি গরু হাটে নিয়েছিলাম। সেখান থেকে ১০টি গরু বিক্রি হয়েছে। ১০টি গরুতে আমাদের চার লাখ টাকা লোকসান হয়েছে।’

খামারি শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি চারটি গরু হাটে নিয়েছিলাম। চারটিই বিক্রি হয়েছে। চারটি গরুতে আমার প্রায় ৫০ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে।’

সোহেল নামের আরও এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমি সাতটি গরু হাটে নিয়েছিলাম। বিক্রি না হওয়ায় সাতটি ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।’

এদিকে খামারে গরু ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ায় গো-খাদ্যের উপর চাপ পড়েছে। অনেক গো-খাদ্য প্রতিষ্টান ঈদের দিন দুপুর থেকে খোলা ছিল।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *