বিয়ানীবাজারে ঈদ শপিংয়ে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়, মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি!

স্টাফ রিপোর্টারঃ

বিয়ানীবাজার উপজেলায় করোনা ভীতি উপেক্ষা করে ঈদ কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন স্থানীয় ক্রেতা-বিক্রেতারা। এক মার্কেট থেকে অন্য মার্কেটে ছুটছেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ পছন্দের জিনিস কিনতে। শপিংমল-ফুটপাতে ক্রেতা বিক্রেতা কেউই মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি।

করোনা সংক্রমণরোধে সকাল ১০ থেকে রাত ৯ পর্যন্ত দোকানপাট খোলা রাখার নির্দেশনা থাকলেও বিয়ানীবাজারে গভীর রাত পর্যন্ত ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়ে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। ফলে ঈদ পরবর্তী সময়ে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে বলে আশংকা করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

প্রতিদিন প্রচুর লোক সমাগমের কারণে সিলেট-বারইগ্রাম সড়কে প্রচুর যানজট দেখা গেছে। রবিবার বিয়ানীবাজার পৌরশহরের বিভিন্ন শপিংমল এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকে শপিং করতে প্রচুর লোকের সমাগম হয়েছে। শপিং সেন্টার গুলোতে উপেক্ষিত স্বাস্থ্য বিধি। কেউই পরছে না মাস্ক।

প্রধান সড়কে ছোট-বড় গণপরিবহণ ছাড়াও ব্যক্তিগত গাড়ি, রিকশা, সিএনজি ও মোটরসাইকেলসহ সব ধরনের যানবাহনের চাপ অনেক বেড়েছে। দুপুর ১২টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫ টা পর্যন্ত পৌরশহরের প্রধান সড়কসহ কলেজ রোড ও মোকাম রোডে যানবাহনের বিপুল চাপ দেখা গেছে। অন্যান্য সময়ের তুলনায় গত এক সপ্তাহ গাড়ির চাপ বেশি থাকায় সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা।

পৌরশহরের জামান প্লাজা, আল আমিন সুপার মার্কেট, হাজী আব্দুস সাত্তার শপিং কমপ্লেক্স ও আজির কমপ্লেক্সের বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সকাল ১০টার দিকে শপিংমল খোলার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতাদের ভিড় বাড়তে শুরু করে। মূলত ঈদকে সামনে রেখেই ক্রেতাদের সমাগম বেশি হচ্ছে। এর মধ্যে নারী ও শিশু ক্রেতাদের সংখ্যাই বেশি রয়েছে।

আর লোক সমাগমের মাঝে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু শপিংমলগুলোর কিছু দোকানে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছিল। তবে ক্রেতা-বিক্রেতাদের অনেককেই মাস্ক পরতে দেখা যায়নি। আবার অনেককেই মাস্ক থুতনিতে ঝুলিয়ে রাখতে দেখা গেছে। এছাড়া, কিছু মার্কেটের প্রবেশ পথে হাত ধোঁয়ার ব্যবস্থা থাকলেও কেউ ব্যবহার করছেনা।

জামান প্লাজার ব্যাবসায়ী আবুল হোসেন জানান, করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে এতদিন মার্কেট বন্ধ থাকায় আমাদের বেশ আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হতে হয়েছে। দোকান ভাড়া, কর্মচারীদের বেতনসহ অন্যান্য খরচ উঠাতে না পারায় এখন ঋণ করে আবার দোকান চালু করতে হয়েছে। তবে এখন বিক্রি কিছুটা ভালো। ঈদের আগ পর্যন্ত যদি এভাবে চলে তবে ক্ষতি কিছুটা কাটিয়ে ওঠা যাবে।

পৌরশহরের প্রধান প্রধান মার্কেটই নয়, শহরের প্রধান সড়কের পাশ ঘেষে গড়ে উঠা ফুটপাতের দোকানগুলোতে ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা যায় বিক্রেতাদের। কথা হয় ফুটপাতে দোকান নিয়ে বসা সুজন আহমদের সাথে, গত কয়েকদিনে বেচা বিক্রি কিছুটা বেড়েছে। এতে করে বিগত কয়েকদিনের ক্ষতিটা পুষিয়ে নিতে পারবেন বলে মনে হচ্ছে।

বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশিক নূর বলেন, বাস্তবতার নিরিখে পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও মানুষ দীর্ঘদিন ঘর বন্দী থাকতে চায় না। মানুষের ডিম্যান্ড, প্রয়োজন সবকিছু বিবেচনা করেই সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। মানুষের প্রয়োজন এবং আবেগের বিষয় দেখার পাশাপাশি উপার্জনের ক্ষেত্রেও সরকারকে খেয়াল রাখতে হয়। তিনি বলেন, জরুরী প্রয়োজনে কেউ যদি বাইরে যান, তাহলেও যেন তারা স্বাস্থ্যবিধিগুলো পরিপূর্ণভাবে মানেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মেয়াজ্জেম আলী খান জানান, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি কবে শেষ হবে, তা বলা সম্ভব নয়। ফলে ঈদের উৎসব বা চলাফেরায় সবাইকে নিজের নিরাপত্তার জন্যই স্বাস্থ্য সতর্কতাগুলো মেনে চলতে হবে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *