পানি কমার আগেই আবার বাড়ছে সুনামগঞ্জে

টানা তৃতীয় দফা বন্যার ধকল সইতে না সইতেই সুনামগঞ্জে আবারও বাড়ছে নদনদীর পানি। সাম্প্রতিক বন্যার পানি ভালো করে নেমে যাওয়ার আগেই নতুন করে ঢলের পানি আসায় নিম্নাঞ্চলগুলোর পরিস্থিতি আবারও অবনতির দিকে যাচ্ছে।

ইতোমধ্যেই সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার সীমান্তবর্তী খাসিয়ামারা ও চেলা নদীর পানি বেড়ে সংলগ্ন নিচু এলাকাগুলোতে প্রবেশ করছে।

এ ছাড়া সুনামগঞ্জের প্রধান নদী সুরমার পানি গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪ সেন্টিমিটার বেড়েছে। তবে তা এখনও বিপৎসীমার নিচে আছে।

খা‌সিয়ামারা নদীর তীরবর্তী একটি গ্রামে থাকেন আনোয়ার হক। সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘পা‌নি দ্রুত বাড়ছে। ন‌দী‌টি ভাঙনকবলিত হওয়ায় উপজেলার বাংলাবাজার, আলীপুর বাজার, চকবাজার, বোগলাবাজার, পূর্ববাংলাবাজার, টেংরা বাজার ও লিয়াকতগঞ্জ এলাকা দিয়ে পা‌নি দ্রুত প্রবেশ করছে।’

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত লক্ষ্মীপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল খালেক বলেন, ‘ঘরের পানিই এখনও নামেনি, এর মধ্যে আবার নতুন করে পানি আসলে যাব কোথায়? পানি যদি বাড়তেই থাকে তাহলে পানিতে ডুবেই আমাদের মরতে হবে।’

একই গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মতিন বলেন, ‘ঘরে পানি ঢুকেছিল কোমর পর্যন্ত। গত দুই দিনে পানি অনেকটাই কমে গেছিল। সকাল থেকে আবার পানি বাড়া শুরু হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্র থেকে ফিরে এসে আবারও সেখানেই যেতে হবে মনে হচ্ছে।’

দোয়ারাবাজারের ইউএনও ফারজানা প্রিয়াঙ্কাও পানি বাড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘গতকাল থেকে এখানে প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। পাশের দেশ ভারতের মেঘালয়েও বৃষ্টি হওয়ায় এ উপজেলার সীমান্তবর্তী খাসিয়ামারা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে নদীসংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের গ্রামগুলোতে পানি প্রবেশ করছে।’

ইউএনও জানান, ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি এলাকায় ত্রাণ কার্যক্রম অব্যাহত আছে। এ ছাড়া এখনও যারা আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন তাদের খাবারের ব্যবস্থাও প্রশাসন করছে।

এদিকে সুনামগঞ্জের নদনদীর পানি বাড়ছে বলে জানিয়েছেন জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহুরুল ইসলামও।

তিনি বলেন, ‘এটি হাওর এলাকা হওয়ায় এখানে পানি থাকবেই। গত ২৪ ঘণ্টায় সুরমা নদীর পানি ১৪ সেন্টিমিটার বেড়েছে। তবে বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি। এ ছাড়া গতকাল রাতে বৃষ্টিপাত আর পাহাড়ি ঢলও অব্যাহত থাকায় গত ২৪ ঘণ্টায় দোয়ারাবাজার উপজেলার খাসিমারা নদীতে পানি ১০ সেন্টিমিটার বেড়ে নিম্নাঞ্চলে প্রবেশ করেছে।’

সূত্রঃ সিলেটটুডে২৪

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *