পরীমনি প্রায় রাতে বন্ধু-বান্ধব নিয়ে মদ খেতে ক্লাবে যেতেন, তদন্ত করছে পুলিশ

বিয়ানীবাজারের ডাক ডেস্কঃ

বোট ক্লাব কাণ্ডের আগের রাতে গুলশান অল কমিউনিটি ক্লাবে দলবল নিয়ে ঢুকে পড়েন পরীমনি। মধ্যরাতে সেখানে তিনি ভাঙচুরও করেন। এ ঘটনার তদন্ত করতে আজ বুধবার (১৬ জুন) সন্ধ্যায় গুলশান থানা পুলিশ যাচ্ছে ক্লাবে। এমনটিই জানা গেছে সংশ্লিষ্ট সূত্রে।

জানা গেছে, ঢাকা বোট ক্লাবে চিত্রনায়িকা পরীমনিকাণ্ডের পর আরো কিছু বিষয় খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে পুলিশ। নিয়ম ভেঙে কয়েকটি সোশ্যাল ক্লাবে মধ্যরাতে পরীমনির যাতায়াত এবং মদ্যপানের খোঁজখবর করছে পুলিশ। এরই মধ্যে বনানী থানা পুলিশ গুলশানের একটি অভিজাত ক্লাবের বার বয়ের বক্তব্য জানতে যোগাযোগ করেছে। এ ছাড়া আরো কয়েকটি অভিজাত ক্লাবের কর্মকর্তারা পুলিশকে জানিয়েছেন মধ্যরাতে নিয়ম ভেঙে পরীমনির জন্য বার খোলা রাখতে হয়। তারা পুলিশকে বলছেন, মদের আসর বসানোর গল্পও।

পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা জানান, ৮ জুন বুধবার রাতে বোট ক্লাবে পরীমনিকাণ্ডের তদন্তে নেমে কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরোচ্ছে। তার ব্যাপারে জানাতে ঢাকার একাধিক সোশ্যাল ক্লাবের কর্মকর্তারা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন। তারা পুলিশ ও গোয়েন্দাদের জানিয়েছেন, পরীমনি তার কস্টিউম ডিজাইনার জিমিসহ কয়েকজন যুবক-যুবতী নিয়ে প্রায় রাতেই অভিজাত ক্লাব ও তারকা হোটেলে ঘুরে বেড়াতেন। তাদের সঙ্গে নিয়ে মদ পান করতেন মধ্যরাত পর্যন্ত। এ ক্ষেত্রে প্রায় রাতেই তার কারণে ক্লাবের আইন ভাঙা হতো। বিশেষ করে হাফপ্যান্ট পরে তার সঙ্গী হওয়া জিমি ড্রেসকোডের তোয়াক্কা করতেন না কখনোই। এক ক্লাবে সময় কাটিয়ে তিনি যেতেন আরেক ক্লাবে।

গুলশান পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা জানান, গত ৩ জুন রাত ১২টার পর পরীমনি, তার সাবেক স্বামী তামিম হাসান ও দুটি বেসরকারি টেলিভিশনের দুজন কর্মকর্তা পরিচয়ধারীকে নিয়ে গুলশানের একটি অভিজাত ক্লাবে যান। তখন তারা মদ্যপ ছিলেন। ক্লাবে ঢুকে পরীমনি ও অন্যরা বার ব্যবহার করতে চান। বারবয় জালাল এতে অসম্মতি জানালে পরীমনি তার গালে চড় মারেন। ক্লাব কর্মকর্তারা বেসামাল আচরণের প্রতিবাদ করলে তিনি নিজেই পুলিশে কল করেন। গুলশান থানা পুলিশের দুটি পিকআপ ভ্যান সেখানে যায়। পরে তারা বুঝিয়ে পরীমনিকে বাসায় পাঠান। এ খবর পুলিশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। সীমানাঘেঁষা এলাকা হওয়ায় বুধবার বনানী থানা পুলিশ ওই ক্লাবের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বারবয় জালালের কাছ থেকে সেই রাতের ঘটনা জানতে চায়। ক্লাবটির সদস্য (প্রশাসন) এ জন্য পুলিশের কাছে সময় চেয়েছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে একাধিক ক্লাব কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সব ক্লাবের ড্রেসকোড এবং নিয়ম রয়েছে। রাত ১১টার পর ক্লাব ও বারে সার্ভিস বন্ধ রাখার নিয়ম। পরীমনি যতবার যে ক্লাবে অতিথি হয়ে গেছেন, সেখানেই এর ব্যত্যয় ঘটেছে। বনানীর একজন ব্যবসায়ী জানান, পরীমনি কথায় কথায় পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার নাম ব্যবহার করেন। সেলিব্রিটি হওয়ায় পুলিশও তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলে মজা পায়। গায়ে দামি পারফিউম মেখে বিলাসবহুল গাড়িতে ঘুরে বেড়ানো পরীর মুখে ভুর ভুরে মদের গন্ধ থাকলেও কেউ তাকে আটকাতে সাহস করেন না। গাড়ির বহর নিয়ে ছুটে চলা পরীমনি দলবল নিয়ে ক্লাবের বারে ঢুকে দামি দামি ব্র্যান্ডের বিদেশি মদের বোতল হাতিয়ে নেন বলে অভিযোগ পাচ্ছে পুলিশ। তার সঙ্গের লোকজন বারের বিল পরিশোধ করেন বলে জানা গেছে।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উত্তর জোনের একজন পদস্থ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দেশের সব অভিজাত ক্লাবের সদস্যদের সঙ্গে পরীর ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। তাদের রেফারেন্সে তিনি সেখানে যাতায়াত করেন। তারকা হোটেলের বারেও তার যাতায়াতের তথ্য পেয়েছে পুলিশ।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *