ঝাঁকে ঝাঁকে রকেট দেখে বিস্মিত ইসরায়েল

বিয়ানীবাজারের ডাক ডেস্কঃ

ইসরায়েলের নৃশংস আগ্রাসনের জবাবে ফিলিস্তিন থেকে রকেট হামলা চালানো হচ্ছে। আগ্রাসনের পাল্টা জবাব হিসেবে যে হারে ঝাঁকে ঝাঁকে রকেট হামলা হচ্ছে, তা দেখে বিস্মিত ইসরায়েল।

ইসরায়েলের সেনাবাহিনী গতকাল রোববার স্বীকার করেছে, এবারের সংঘাতে তারা ফিলিস্তিন থেকে সর্বোচ্চহারে রকেট হামলার মুখে পড়েছে। বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর কমান্ডার মেজর জেনারেল অরি গর্ডিন বলেন, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীন হামাস গোষ্ঠী আজ সোমবার পর্যন্ত ইসরায়েলি ভূখণ্ড লক্ষ্য করে প্রায় তিন হাজার রকেট ছুড়েছে।

আগে হামাস বা লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘাতকালে ইসরায়েলের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে যে হারে রকেট ছোড়া হয়েছিল, সেই তুলনায় এবার ইসরায়েল অনেক বেশি হারে রকেট হামলার মুখে পড়েছে বলে জানান মেজর জেনারেল অরি গর্ডিন।

ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর তথ্যমতে, ২০১৯ সালের নভেম্বরে ফিলিস্তিনের সঙ্গে এক দফায় সংঘাতে জড়ায় ইসরায়েল। তখন তিন দিনে গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে মোট ৫৭০টি রকেট ছোড়ে হামাস।

২০০৬ সালে লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধে জড়ায় ইসরায়েল। ওই যুদ্ধে ১৯ দিনে হিজবুল্লাহ প্রায় ৪ হাজার ৫০০ রকেট হামলা চালায় ইসরায়েলে। হিজবুল্লাহর রকেট হামলায় তখন ইসরায়েলের জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। হিজবুল্লাহর সঙ্গে এই যুদ্ধের পরই ইসরায়েল একটি নতুন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা গড়ার বিষয়ে ঘোষণা দেয়। তারপরই তারা ‘আয়রন ডোম’ নামের বিশ্বের অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলে। ইসরায়েল ২০১১ সালে প্রথম ‘আয়রন ডোম’ মোতায়েন করে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, আয়রন ডোমের মাধ্যমে তারা অধিকাংশ রকেট হামলা আকাশেই ঠেকিয়ে দিচ্ছে। তবে এবার গাজা থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে রকেট হামলার পরিপ্রেক্ষিতে আয়রন ডোমের দুর্বলতা সামনে আসছে। গাজা থেকে ছোড়া অনেক রকেট আয়রন ডোম ফাঁকি দিয়ে ইসরায়েলে আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছে।

প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন রক্তক্ষয়ী সংঘাত চলছে। এই সংঘাতে আজ পর্যন্ত ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে সর্বোচ্চহারে রকেট হামলা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্ন ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর কমান্ডার মেজর জেনারেল অরি গর্ডিনের কাছে রেখেছিলেন সাংবাদিকেরা। জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে তিনি শুধু একমতই নন, এ-সংক্রান্ত তথ্যও উপস্থাপন করছেন।

গতকাল পর্যন্ত ইসরায়েলের নৃশংস হামলায় গাজায় প্রাণহানি বেড়ে প্রায় ২০০ হয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ৫৮টি শিশু রয়েছে। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ বলছে, এ পর্যন্ত তাদের ১০ জন নিহত হয়েছে।

ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যকার রক্তক্ষয়ী সহিংসতা অবিলম্বে বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, এই সহিংসতা অঞ্চলটিকে একটি নিয়ন্ত্রণহীন সংকটে নিমজ্জিত করতে পারে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *