জলঢুপ উচ্চ বিদ্যালয়ে চাপ দিয়ে বকেয়া বেতন আদায়, শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ

বিয়ানীবাজারের ডাক ডেস্কঃ

বিয়ানীবাজার উপজেলার জলঢুপ উচ্চ বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে বকেয়া বেতন, মূল্যায়ন পরীক্ষার ফি আদায় করতে শিক্ষার্থীদের চাপ ও ফি না দিলে পরীক্ষা খাতা জমা না রাখার হুমকী প্রদানের অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার সকালে শিক্ষার্থীরা বেতন আদায় করলেও পরীক্ষা ফি মওকুফের জন্য প্রধান শিক্ষক জালাল উদ্দিনের কাছে অনুরোধ জানান।

জবাবে তিনি পরীক্ষা ফি না দিলে মূল্যায়ন পরীক্ষার উত্তরপত্র জমা নেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন।

এসময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে ও পরে বিদ্যালয়ের সামনে বিয়ানীবাজার – বারইগ্রাম সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এসময় সড়ক অবরোধ হয়ে পড়ে। পরে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের দাবী মানার আশ্বাস দিলে তারা অবরোধ তুলে নেয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, কয়েকদিন থেকে মূল্যায়ন পরীক্ষার উত্তরপত্র জমা নেওয়ার জন্য নিয়মিত আমাদের বিদ্যালয়ে আনা হচ্ছে। ওয়াসআপে শিক্ষকদের পাঠানো প্রশ্নপত্রের উত্তর আমাদের নিজস্ব কাগজে লিখে এনে জামা দিচ্ছি। তারপরও স্যাররা আমাদের কাছ থেকে ৫০ টাকা করে অতিরিক্ত পরীক্ষা ফি নিচ্ছেন। কেউ দিতে অপারগ হলে খাতা জমা রাখা হচ্ছে না। আমরা এই বিষয়ের একটি সুষ্ঠু সমাধান চাই।

হাফিজ আহমদ নামে এক অভিভাবক জানান, আমি একটা দোকানে চাকুরী করি। একমাত্র আমার উপার্জনে সংসার ও ছোট এক ভাইয়ের পড়া লেখার খরচ চলে। বর্তমান অবস্থায় খেয়ে পড়ে যেখানে বাঁচা দায় এমতাবস্থায় প্রায় ২ হাজার টাকা বেতন ও ফি বাবতে জমা দিতে হচ্ছে। ভাই জানিয়েছে ফি না দিলে নাকি পরীক্ষা দিতে দেওয়া হবে না তাই বাধ্য হয়ে দেনা করে ফি পরিশোধ করেছি।

জলঢুপ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জালাল উদ্দিন জানান, মূল্যায়ন পরীক্ষার জন্য ফি নিচ্ছি। যারা পারবে তারা দেবে না পারলে নিচ্ছি না। তবে সড়ক অবরোধের বিষয়ে কিছু জানি না।

প্রধান শিক্ষক অবরোধের বিষয়ে প্রধান শিক্ষক অস্বীকার করলেও ঘটনাস্থলে উপস্থিত লাউতা ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান সামছুল হক বলেন, ছাত্রদের হট্টগোলের খবর শুনে এসেছি। আসার পর শুনলাম চাপ দিয়ে বেতন ও পরীক্ষা ফি আদায়ের প্রতিবাদে ছাত্ররা আন্দোলন করছে। তবে শিক্ষকরা তাদের দাবী মানার আশ্বাসে এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

বিয়ানীবাজার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মৌলুদুর রহমান জানান, এখন পর্যন্ত বেতন নেওয়া বা মওকুপের বিষয়ে আমাদের কোন নির্দেশনা দেওয়া হয় নি। তবে বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ে বেতন আদায়ের খবর পাচ্ছি। তবে বাধ্য করে কারো কাছ থেকে বেতন আদায় করা যাবে না বলে জানান তিনি। এখনও পর্যন্ত বার্ষিক পরীক্ষার বিষয়ে কোন সিন্ধান্ত না হওয়ায় পরীক্ষা ফি আদায়ের কোন প্রশ্নেই আসে না।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *