খাদের কিনারা থেকে আফিফ-মিরাজদের সাগরিকা জয়

আফিফ-মিরাজদের সাগরিকা জয়

প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নাজিবুল্লাহ জর্দানের অর্ধ-শতকের উপর ভিত্তি করে আফগানিস্তান নির্ধারিত ৫০ ওভারে বাংলাদেশকে ২১৬ রানের টার্গেট দেয়।

তাস্কিন তার প্রথম স্পেলে রান দিলেও শেষের দিকে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দুটি উইকেট এনে দেন। অন্যদিকে মুস্তাফিজ-শরিফুল ঠিকঠাক বোলিং করে আফগানিস্তান ব্যাটসম্যানদের হাত খুলে খেলার সুযোগ দেননি। সাকিব দুই উইকেট নিলেও তার স্বভাবসুলভ বোলিং করতে পারেননি, কিপটে মিরাজ তার স্পেলে কেবালমাত্র উইকেট নামক সোনার হরিনের দেখা পাননি। যার ফলসরুপ আফগানিস্তান সব উইকেট হারিয়ে ২১৫ রান করতে সক্ষম হয়।

প্রথম ইংনিস শেষে কুয়াশার কথা মাথায় রেখে বুঝাই যাচ্ছিল আফগানিস্তান অন্তত ৪০-৫০ রান কম করেছে। কিন্তু অভিষিক্ত বোলার ফারুকি অবিশ্বাস্য বোলিং করে আফগানিস্তানকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনে।

ফারুকি তার প্রথম স্পেলে পর পর দুই ওভারে ২টি করে উইকেট তুলে নেওয়ার পর নিতান্ত সাধারণ টার্গেটটিও বাংলাদেশের সমক্ষে পাহাড়ের মত লাগছিল।

খুব স্বাভাবিকভাবেই সেই সময়ই ম্যাচের শেষ দেখে ফেলেছিলেন। ক্রিকেটের যুক্তি তর্ক দিয়ে বিবেচনা করলেও ৪৫ রানে ৬ উইকেট পড়ার পর আফগানিস্তানই ম্যাচটি জেতার জন্য হট ফেবারিট ছিল। কিন্তু তারুণ্যের বাংলাদেশ ক্রিকেটের যুক্তি তর্ককে পেছনে ফেলে ইতিহাস গড়বে সেটাই স্বাভাবিক। রুপকথার গল্পকে হার মানানোর মত একটি পার্টনারশিপ গড়ে মিরাজ ও আফিফ শুধুমাত্র দলের জন্য জয় এনে দেননি বরং রেকর্ডে বইয়ের পাতাতে
নিজেদেরকে অমর করেছেন।

ফারুকি তার প্রথম স্পেলে ৪ উইকেট নেওয়ার পর আপনি মনে করতেই পারেন এটা রাশিদ-মুজিব-নবি ত্রয়ির জন্য স্রেফ একটা আনুষ্ঠানিকতা। রাশিদ খান তার স্পেলের প্রথম ওভারেই সায়লেন্ট কিলার মাহামুদুল্লাহকে আউট করে সেই চিন্তাভাবনাকে রশদ যোগিয়েছিলেন। কিন্তু মেহেদি মিরাজ উইকেটে আসার পর বদলে যায় দৃশ্যপট। তাদের পার্টনারশিপের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক ছিল তাদের স্ট্রাইক রোটেশন, বলের মেরিট অনুযায়ী খেলে তারা আস্তে আস্তে দলকে ভিড়িয়েছেন তীরে। উপরন্তু তারা বাড়তি কোন ঝুকি নেননি। যেই সময় যে বোলারের উপর চড়াও হওয়ার কথা ঠিক সেই বোলারকেই টার্গেট করেছেন। তাদের মূল ফোকাস ২১৬ রানের উপর থাকলেও তারা প্রথমে টার্গেট করেছেন সম্পুর্ন ৫০ ওভার খেলার। আর সেই জন্য শেষ পর্যন্ত মিরাজ ও আফিফ দ্বয়ী দলকে খাদের কিনারা থেকে তুলে এনেছেন।

ম্যাচের পরিস্থিতি বিবেচনায় এই জয়টি বাংলাদেশের সেরাগুলোর মধ্যে একটি।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *