ওসমানী বিমানবন্দরে চুরি হওয়া ব্যাগ হবিগঞ্জে উদ্ধার

দুবাই থেকে ১৮ জানুয়ারি বিমান বাংলাদেশে এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে ঢাকায় আসেন সানজিদা ইসলাম। সেদিনই ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তিনি চলে যান সিলেট। সেখানে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তার একটি কার্টন চুরি হয়। অবশেষে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আর্মড পুলিশের তৎপরতায় হবিগঞ্জ জেলা পুলিশ কার্টনটি উদ্ধার করে হবিগঞ্জের দক্ষিণ কোইল গ্রাম থেকে।

সানজিদা ইসলাম বলেন, আমি ১৮ জানুয়ারি ঢাকায় আসি। তারপর ডমিস্টিক ফ্লাইটে সিলেট যাই। যাওয়ার পর আমার ৩টি ব্যাগের মধ্যে ২টি পাই আর একটি কার্টন আর পাইনি। তখন সেখানে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স ও ওসমানী বিমানবন্দরে অভিযোগ দেই। সেখান থেকে কোনও সহযোগিতার আশ্বাস না পেয়ে ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় শাহজালাল বিমানবন্দরে আর্মড পুলিশের কাছে অভিযোগ দেই। তারা (আর্মড পুলিশ) আশ্বাস দেয় কার্টনটির উদ্ধার করে দেওয়ার।

সূত্র জানায়, সানজিদা ইসলামের অভিযোগ পাওয়ার পর শাহজালাল বিমানবন্দরের ১৮ জানুয়ারি তারিখের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ চেক করে বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ। তবে সেই ফুটেজে দেখা যায় সানজিদা ৩টি ব্যাগ নিয়ে ঢাকায় আসেন। সেই ব্যাগগুলো নিয়েই সিলেটগামী ইউএস বাংলার ফ্লাইটে উঠেন। পরবর্তীতে ইউএস বাংলা ও সিলেটের ওসমানী বিমানবন্দরের সঙ্গে যোগাযোগ করে আর্মড পুলিশ। সেদিনের সিলেট বিমানবন্দরের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। এবার সেই ফুটেজ চেক করে আর্মড পুলিশ শনাক্ত করে অন্য এক নারী সানজিদার কার্টনটি নিয়ে চলে গেছেন।

কিন্তু কে সেই নারী, তার পরিচয়, ঠিকানা উদ্ধার করা সহজ কাজ ছিল না বলে জানান বিমানবন্দর আর্মড পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন। তিনি বলেন, সিলেটে বিমানবন্দরের ভিডিও ফুটেজ সানজিদাকে দেখানো হয়। তখন তিনি ভিডিও দেখে শনাক্ত করতে সক্ষম হন যে নারী তার কার্টন নিয়ে গেছে তিনি তার পাশে সিটে বসেই ঢাকা থেকে সিলেট এসেছেন। ওই নারী দুবাই প্রবাসী। এরপর এয়ারলাইন্সের মাধ্যমে যাত্রীর পাসপোর্ট নাম্বার ও তথ্য সংগ্রহ করা হয়। জানা যায়, কার্টনটি যিনি নিয়েছেন তার নাম তাকমিনা, তিনি প্রবাসী কর্মী, দোহা থেকে দেশে এসেছেন।

আলমগীর হোসেন বলেন, তাকমিনার পাসপোর্টে দেওয়া গ্রামের ঠিকানায় পুলিশ পাঠিয়ে দেখা গেলো সেখানে তারা থাকেন না। পাসপোর্টে দেওয়া নাম্বারটি গোপলগঞ্জে এক নারীর নাম্বার। বিএমইটি কার্ডেও তার দেওয়া ফোন নম্বরটি অন্য একজন ব্যবহার করছেন। ফলে তাকে খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।

পরবর্তীতে পাসপোর্ট অফিসের সহায়তায় তাকমিনার জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। হবিগঞ্জ জেলা পুলিশের সহায়তা নেয় বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন বলেন, হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার যথেষ্ট সহায়তা করেছে। জেলা পুলিশ অনুসন্ধান করে তাকমিনার গ্রামের বাড়ি খুঁজে বের করে। কিন্তু সেখানে যেয়ে দেখা যায় তার বিয়ে হয়ে গেছে বিদেশ থেকে আসার এক সপ্তাহ পর। ৩ মার্চ শ্বশুরবাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। প্রথমে সে চুরির বিষয় অস্বীকার করে। কিন্তু পরবর্তী জিজ্ঞাসাবাদে সে কার্টন চুরির কথা স্বীকার করে এবং মালামালগুলো জেলা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।

এ ঘটনায় অভিভূত সানজিদা ইসলাম। তিনি বলেন, আমি তোও কল্পনাও করতে পারিনি আমার পাশের সিটে বসে যাওয়া যাত্রী আমার কার্টন চুরি করবে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে অবাক হয়েছিলাম। প্রথমে আমি আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। ওই কার্টনে একটি আইফোনসহ ৩টি মোবাইল সেট, ব্লেন্ডার, গিটারসহ বেশ কিছু মূল্যবান জিনিস ছিল।

সৌজন্যে: বাংলা ট্রিবিউন

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *