৩০ হাজার টাকা দিয়ে ব্যবসা শুরু করে এখন লাখপতি সিলেটের মেয়ে বনানী

বিয়ানীবাজারের ডাক ডেস্কঃ

ঐতিহ্যবাহী জামদানি বাঁচিয়ে রাখতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার। এই উদ্যোগে সামিল হয়েছেন দেশের নারী উদ্যোক্তারাও। এরই মধ্যে অন্যতম সিলেটের মেয়ে বনানী চৌধুরী। সারাবিশ্বে জামদানি ছড়িয়ে দিতে কাজ করছেন তিনি।

ডাক নাম সীমা। কিন্তু স্বপ্ন অসীম। মেধা, শ্রম আর সততা- এই তিনের সমন্বয়ে তিনি আজ সফল নারী উদ্যোক্তা। তিনি ‘বঙ্গজ‘ এর স্বত্বাধিকারী। জামদানি বিক্রির পাশাপাশি নিজস্ব কারিগর দিয়ে তৈরি শাড়ি, পাঞ্জাবিসহ বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করেন অনলাইনে।

সীমা ছোটবেলা থেকেই নাচ করতেন। তিনি নৃত্যশৈলীর সদস্য। পড়াশোনা শেষে চাকরিতে ঢুকেন। শিক্ষকতাসহ বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত হলেও তিনি ব্যবসাতেই স্বাচ্ছন্দ বোধ করছেন। সিলেটের প্রথম মেয়ে হিসেবে তিনিই প্রথম জামদানি বিক্রি করে লাখপতি হয়েছেন। কর্মসূত্রে এখন থাকছেন ঢাকায়।

সফলতার পেছনের গল্প জানতে চাইলে পুরো কৃতিত্বই দেন স্বামী বিপ্লব করকে। বনানী বলেন, ‘দীর্ঘ ১৩ বছর চাকরি করেছি। সংসার আর সন্তান সামলাতে গিয়ে প্রায় ৭ বছর চাকরি করতে পারিনি। এরপর নতুন করে শুরুর অনুপ্রেরণা পাই বিপ্লবের কাছ থেকেই। এ ক্ষেত্রে আমি বিপ্লবকে পেয়েছি বন্ধু ও সহযোদ্ধা হিসেবে।’

স্বামীর অনুপ্রেরণাতেই তিনি গত জুনে ই-কমার্স গ্রুপ `উই’তে যোগ দেন। উই এর মাধ্যমে জামদানি সম্পর্কে অনেককিছু জানতে পারেন। বনানীর ভাষায় তখনই তিনি `জামদানির প্রেমে’ পড়েন এবং জামদানি নিয়ে কাজ শুরুর সিদ্ধান্ত নেন।

মাত্র ৩০ হাজার টাকা দিয়ে শুরু। এর পরের গল্প শুধুই সফলতার। বঙ্গজের জন্য হ্যান্ড পেইন্টিং গহনা তৈরি করেন বনানীর স্বামী বিপ্লব; যিনি পেশায় আর্টিস্ট। বঙ্গজের শাড়ি, গহনা, পাঞ্জাবি এখন দেশের সীমানা ছাড়িয়ে যাচ্ছে বিদেশে। আমেরিকা ও প্যারিসের পর যাচ্ছে লন্ডনে। ডিসেম্বরে যাবে কানাডাতেও। জুলাইয়ে অনলাইয়ে বিক্রি করে মাত্র চার মাসের মাথায়ই তিনি প্রায় ৩ লাখ টাকার পণ্য বিক্রি করেছেন।

বনানী জানান, নিজস্ব কারিগর দিয়ে তৈরি শাড়ি, জামদানি, থ্রি-পিস, টু-পিস ও পাঞ্জাবির মূল্য ৮৫০ টাকা থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত। ফেসবুকে গ্রুপ (https://www.facebook.com/bangaj.bd) খুলে তিনি ব্যবসা পরিচালনা করছেন।

ভবিষ্যত পরিকল্পনার কথা জানিয়ে বনানী চৌধুরী সীমা এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘জামদানি নিয়ে কাজ করার আমার স্বপ্ন। আমি চাই অনলাইনের মাধ্যমে সারাবিশ্বে জামদানি ছড়িয়ে দিতে। এতে জামদানিও বাঁচবে, আমার স্বপ্নও বাঁচবে আর আমি আর্থিকভাবেও লাভবান হব।’ তিনি নিজস্ব ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বঙ্গজকে আরও সমৃদ্ধ করার আগ্রহের কথা জানিয়েছেন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *