হাজী সেলিমের ছেলের বাসায় টর্চার সেল

বিয়ানীবাজারের ডাক ডেস্কঃ

নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত সাংসদ হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিমের বাসায় টর্চারের সন্ধান পেয়েছে র‍্যাব।

সোমবার (২৬ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পুরান ঢাকার চকবাজারের ২৬ নম্বর দেবিদাসঘাট লেনের বাড়িতে অভিযান চালান র‍্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। সেখান থেকে বেশ কিছু অবৈধ জিনিসপত্র উদ্ধারের পর র‍্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ভ্রাম্যমাণ আদালত ইরফান সেলিম এবং তার দেহরক্ষী জাহিদুল ইসলামকে এক বছরের কারাদণ্ড দেন।

অভিযানের পর সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে ব্রিফিংয়ে র‍্যাবের মিডিয়া উইংয়ের প্রধান লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ জানান, বেলা সাড়ে ১২টার সময় তারা অভিযুক্তের বাসা এবং অভিযুক্তকে শনাক্ত করতে সক্ষম হন। এরপর তারা সাংসদ হাজী মোহাম্মদ সেলিমের দ্বিতীয় ছেলে ইরফান মোহাম্মদ সেলিম এবং তার দেহরক্ষী জাহিদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন।

র‍্যাব জানিয়েছে, ইরফানের বাসা তল্লাশি করে বেশ কিছু অবৈধ জিনিসপত্র পাওয়া গেছে। এরমধ্যে রয়েছে লাইসেন্সবিহীন একটি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, ৫-৬ লিটার বিদেশি মদ এবং ৩৮ থেকে ৪০টি বিভিন্ন ধরণের ওয়াকিটকি।

র‍্যাব জানিয়েছে, সাধারণ নিরাপত্তা বাহিনী বা যেকোনো সুশৃঙ্খল বাহিনী এ ধরণের ওয়াকিটকি ব্যবহার করে থাকে।

এছাড়া দেহরক্ষী জাহিদুল ইসলামের কাছ থেকে চারশ পিস ইয়াবা এবং একটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

তাদের অবৈধ ওয়াকিটকি রাখা ও ব্যবহারের জন্য ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া মাদক রাখার জন্য আরো ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন র‍্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। অর্থাৎ প্রত্যেকের মোট এক বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

এছাড়া ইরফান সেলিমের ভবনের পাশেই একটি টর্চার সেল পাওয়া গেছে জানিয়েছে র‍্যাবের ব্রিফিংয়ে বলা হয়েছে, সেখান থেকে হ্যান্ডকাপ উদ্ধার করা হয়েছে।

এর আগে ২৫ অক্টোবর রাতে ঢাকা-৭ আসনের এমপি হাজী মোহাম্মদ সেলিমের ‘সংসদ সদস্য’ লেখা সরকারি গাড়ি থেকে নেমে নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিফ আহমেদ খানকে মারধর করা হয়। রাতে এ ঘটনায় জিডি হলেও ২৬ অক্টোবর ভোরে হাজী সেলিমের ছেলেসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে ধাণমন্ডি থানায় মামলা করেন ওয়াসিফ।

মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলাটি করা হয়েছে। আসামিরা হলেন, ইরফান সেলিম, এ বি সিদ্দিক দীপু, জাহিদ, মীজানুর রহমান ও অজ্ঞাতনামা আরও দুই/তিনজন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ইরফানের গাড়ি ওয়াসিমকে ধাক্কা মারার পর নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিম সড়কের পাশে মোটরসাইকেলটি থামান এবং গাড়ির সামনে দাঁড়ান। নিজের পরিচয় দেন। এরপরই গাড়ি থেকে কয়েকজন বের হয়ে ওয়াসিমকে কিলঘুষি মারেন এবং তার স্ত্রীকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। তারা মারধর করে ওয়াসিমকে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে যান।

পরে তার স্ত্রী, স্থানীয় জনতা এবং পাশে ডিউটিরত ধানমন্ডির ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা তাকে উদ্ধার করে আনোয়ার খান মডেল হাসপাতালে নিয়ে যান।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *