হবিগঞ্জের নিপু এখন পর্তুগাল জাতীয় দলের তারকা ক্রিকেটার

হবিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ

সিরাজুল্লাহ খাদেম নিপু। ২০০৬ সালের যুব বিশ্বকাপ ক্রিকেটে মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালের সাথে অলরাউন্ডার হিসেবে যে বাংলাদেশি ক্রিকেটার নজর কেড়েছিলেন, তিনিই সেই।

সে সময় দারুণ বাঁহাতি পেইসে ব্যাটসম্যানদের ভুগিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে ব্যাট করতেন মিডল ও লোয়ার মিডল অর্ডারে। জাতীয় দলের আশপাশে থাকা এই ক্রিকেটার চুক্তিবদ্ধ ছিলেন বিসিবির সঙ্গে।

সেই শুরু হতে না হতেই ইনজুরির কারণে থমকে যায় হবিগঞ্জে বেড়ে ওঠা এই ক্রিকেটারের ক্যারিয়ার। গ্রামের মাঠে টেনিস বল দিয়ে ক্রিকেট খেলতে গিয়ে বাম চোখে আঘাত পান। বিসিবি থেকে চিকিৎসার যথাযথ উদ্যোগ না নেয়ার হতাশায় ক্রিকেট ছেড়ে দেন।

জীবিকার তাগিদে একসময় বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যান পর্তুগালে। পেয়ে যান সেই দেশের নাগরিকত্ব। কাজের অবসরে ক্রিকেট খেলা শুরু করেন সেখানেও।

সিরাজুল্লাহ এখন পর্তুগাল জাতীয় দলের নিয়মিত তারকা। একসময়ের সতীর্থ সাকিব, মুশফিক ও তামিম যখন বিশ্ব ক্রিকেটের প্রতিষ্ঠিত নাম ও অন্যতম সেরা তারকা, তখন পর্তুগালের জার্সি চাপিয়ে ক্যারিয়ার চালিয়ে যাচ্ছেন সিরাজুল্লাহ।

সিরাজুল্লাহ নিপুর জাতীয় দলে অভিষেক হয়েছে গত সপ্তাহে। মাল্টা ও জিব্রালটারকে নিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজ আয়োজন করে পর্তুগাল। পর্তুগালের আলবারগিয়ার গুশেরে ক্রিকেট গ্রাউন্ডে শনিবার জিব্রালটারের বিপক্ষে খেলেন সিরাজুল্লাহ। ১৬ রানে পান ৩ উইকেট।

বয়সভিত্তিক দলে খেলার সময় অস্ট্রেলিয়ান প্রাদেশিক টুর্নামেন্ট ডারউইন প্রিমিয়ার লিগে স্থানীয় ক্লাবের পক্ষে খেলার সুযোগ পান সিরাজুল্লাহ। নিপু সম্পর্কে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ বলেন, ‘সে একজন দুর্দান্ত অলরাউন্ডার ছিল। ম্যাচের গতি পরিবর্তন করার স্বাভাবিক ক্ষমতা ছিল ওর।’

বাংলাদেশের হাই পারফরম্যান্স (এইচপির) স্কোয়াডের সাবেক কোচ শন উইলিয়ামসের প্রত্যাশা ছিল বাংলাদেশ জাতীয় দলের পরবর্তী সেরা অলরাউন্ডার হবেন সিরাজুল্লাহ নিপু। উইলিয়ামসই এই তরুণকে ২০০৭ সালে ডারউইন লিগে খেলতে পাঠান।

তারও আগে মাত্র ১৭ বছর বয়সে মোহামেডানের মতো দলে জায়গা করে নেন নিপু। ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটও খেলেছেন সিলেট বিভাগের হয়ে। তবে চোখে আঘাত পাওয়ায় তখনকার মতো ক্রিকেট ব্যাট-বল তুলে রাখতে হয় তাকে।

উঠতি বয়সে যে স্বপ্ন পূরণ হয়নি, সেই জাতীয় দলের খেলার স্বপ্ন অবশেষে পূরণ হয়েছে ৩৩ বছর বয়সী সিরাজুল্লাহ নিপুর। জন্মভূমি বাংলাদেশের হয়ে না হোক, কর্মভূমি পর্তুগালের হয়েই আইসিসি লেভেল ফোরের টুর্নামেন্ট মাতাচ্ছেন এই পেইস বোলিং অলরাউন্ডার।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *