লিবিয়া থেকে ইতালি : ‘হৃদয় আমার কোলে পানি চাইতে চাইতে মারা গেছে’

বিয়ানীবাজারের ডাক ডেস্কঃ

লিবিয়া থেকে সাগর পাড়ি দিয়ে অবৈধভাবে ইতালি যাওয়ার সময় বাংলাদেশি যুবক হৃদয় কাজীর (২০) মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। তিনি মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার ঘোষালকান্দি গ্রামের মোশারফ কাজীর ছেলে।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত রমজানের আগে মুকসুদপুর উপজেলার চরপ্রসন্নদী গ্রামের হাকিম দালালের মাধ্যমে চার লাখ ২০ হাজার টাকার চুক্তিতে লিবিয়ায় পৌঁছায় হৃদয়। সেখানে দালালরা তাকে আটকে রেখে অতিরিক্ত এক লাখ টাকা আদায় করে। সেখান থেকে ইলিয়াস দালালের মাধ্যমে আরো তিন লাখ ৫০ হাজার টাকার চুক্তিতে ইতালি নিয়ে যাওয়ার কথা হয়। ইলিয়াসের বাড়িও মুকসুদপুর উপজেলার বড়দিয়া গ্রামে।

সেই চুক্তি অনুযায়ী ১৯ জুলাই প্লাস্টিকের বোর্টেং মোট ৬১ জনকে নিয়ে ইতালির উদ্যেশ্যে রওনা হয়। অনেক দেশের সীমান্তে পৌঁছানোর পরও নিরাপত্তরক্ষীদের কারণে কোন দেশেই তারা নামতে পারেনি। প্রচণ্ড রোদের মধ্যে সাগরে অনেক সময় ভাসতে থাকার কারণে হিট স্ট্রোকে ১৭ জন বাংলাদেশিসহ মোট ৩০ জনের মৃত্যু ঘটে। বাকিরা অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

পরে তুরস্কের কোস্টগার্ড এসে তাদের উদ্ধার করে। হৃদয়ের লাশ তুরস্কে আছে বলে জানিয়েছেন তার বন্ধু ও স্বজনরা।

একই বোর্টে থাকা হৃদয় কাজীর বন্ধু হৃদয় শেখ বলেন, ‘হৃদয় কাজী আমার কোলেই পানি পানি করতে করতে মারা গিয়েছে। আমিও অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন আছি। এছাড়াও একই উপজেলার ছাতিয়ানবাড়ী গ্রামের সাধন বিশাস, হোসেনপুর এলাকার জিন্নাত শেখ এবং শংকরদী গ্রামের সাগর সিকদারও চিকিৎসাধীন আছে।’

হৃদয় কাজীর কাকা মিরাজ কাজী জানান, আমার ভাতিজা ইতালি যাওয়ার পথে মারা গেছে। এখন আমাদের একটাই দাবি ওর লাশটা যেন শেষবারের মত একবার দেখতে পারি।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *