মুনিয়ার মৃত্যু: বসুন্ধরা এমডির সংশ্লিষ্টতা পায়নি পুলিশ

বিয়ানীবাজারের ডাক ডেস্কঃ

কলেজছাত্রী মুনিয়ার মৃত্যুর ঘটনায় বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহানের কোনো সংশ্লিষ্টতার তথ্য-প্রমাণ পায়নি পুলিশ। এ জন্য আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগের মামলা থেকে সায়েম সোবহানকে অব্যাহতি দিয়ে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে পুলিশ।

এদিকে পুলিশের দেওয়া ওই প্রতিবেদনের ওপর ২৯ জুলাই শুনানির দিন ধার্য করেন আদালত। ওইদিন আদালত সিদ্ধান্ত নেবেন চূড়ান্ত এই প্রতিবেদন গ্রহণ করবেন কিনা।

গত ২৬ এপ্রিল রাতে গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মুনিয়ার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় মুনিয়ার বড় বোন বাদী হয়ে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে গুলশান থানায় মামলা করেন। মামলার একমাত্র আসামি ছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর।

গুলশান থানায় দায়ের করা মামলার এজাহার উল্লেখ করা হয়, মোসারাত জাহান মুনিয়ার (২১) মিরপুর ক্যান্ট. পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। দুই বছর আগে মামলার আসামির সঙ্গে মোসারাতের পরিচয় হয়। পরিচয়ের পর থেকে তারা বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় দেখা করতেন এবং সব সময় মোবাইলে কথা বলতেন। আসামির সঙ্গে মুনিয়ার প্রেমের সম্পর্ক ছিল।

দুই বছর আগে মুনিয়াকে স্ত্রী পরিচয় দিয়ে রাজধানীর বনানীতে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেন আসামি। সেখানে দুজনে বসবাস করতে শুরু করেন। এক বছর পরই আসামির পরিবার এক নারীর মাধ্যমে তাদের প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি জানতে পারে। পরে আসামির মা তাকে ডেকে ভয়ভীতি দেখান এবং মুনিয়াকে ঢাকা থেকে চলে যেতে বলেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়। পরে আসামি মুনিয়াকে তাদের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লায় পাঠিয়ে দেন এবং পরে বিয়ে করবেন বলে আশ্বাস দেন।

এরপর গত ১ মার্চ মুনিয়াকে সঙ্গে নিয়ে আবারও বাসা ভাড়া নেন আসামি। এবার গুলশানে ওঠেন তারা। মাঝে মাঝেই ওই ফ্ল্যাটে যাতায়াত করতেন আসামি। আসামি মুনিয়াকে বিয়ে করে বিদেশে স্থায়ী হওয়ার আশ্বাস দেন।

বাদী এজাহারে বলেন, সম্প্রতি ওই বাসার মালিকের বাসায় ইফতার করেন মুনিয়া। পরে ছবিটি ফেসবুকে শেয়ার করেন। এ নিয়ে দুজনের মাঝে মনোমলিন্য হয়। আসামি মুনিয়াকে কুমিল্লায় চলে যেতে বলেন। আসামির মা জানতে পারলে মুনিয়াকে মেরে ফেলবেন।

২৫ এপ্রিল মুনিয়া বাদীকে বলেন, আসামি তাকে বিয়ে করবে না, শুধু ভোগ করেছে। আসামি তাকে ধোঁকা দিয়েছে। যে কোনো সময় তার বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।

এজাহারে আরও বলা হয়, নুসরাত তার আত্মীয়স্বজনদের নিয়ে ২৬ এপ্রিল কুমিল্লা থেকে ঢাকায় রওনা হন। গুলশানের বাসায় পৌঁছে দরজা ভেতর থেকে লাগানো দেখতে পান। পরে মিস্ত্রি এনে তালা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে শোয়ার ঘরে সিলিংয়ের সঙ্গে মুনিয়ার ঝুলন্ত লাশ দেখেন। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।

মামলার পর গত ২৭ এপ্রিল ‍পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আনভীরের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।

ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) জাফর হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, আনভীরের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে পুলিশের করা আবেদন আদালত মঞ্জুর করেন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *