ঢাকার রাস্তা যেনো ইতালির ভেনিস!

বিয়ানীবাজারের ডাক ডেস্কঃ

মঙ্গলবার সকাল থেকেই রাজধানীতে শুরু হয় ঝুম বৃষ্টি। প্রায় দুই ঘণ্টার এই বৃষ্টিতে নগরবাসী যেমন মুক্তি পেয়েছে তীব্র গরম থেকে, তেমনি এই নগরী পেয়েছে নতুন রূপ। মালিবাগ, বনানী, ধানমন্ডি, পান্থপথ, মিরপুর, গ্রিন রোড, এয়ারপোর্ট রোডসহ বিভিন্ন এলাকার রাস্তাগুলোকে দেখলেই মনে হচ্ছে হয়তো ইতালির ভেনিসে চলে এসেছি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও নেটিজেনরা হয়ে উঠেছেন সক্রিয়। অনেকেই পোস্ট করেছেন জলাবদ্ধ রাস্তার ছবি কিংবা ভিডিও। এর সঙ্গে অনেকেই লিখেছেন, বের হবেন না, ভেসে যাবেন, কিংবা সমুদ্র বিলাসের মতো ক্যাপশন। সবাই যেনো এই জলাবদ্ধতায় আবদ্ধ। রাস্তায় কোমরসমান পানি, তীব্র জ্যাম আর যানবাহন সঙ্কটে যে যার মতো বিরক্তি প্রকাশ করছেন।

সকালের এই বৃষ্টিতে বিপাকে পড়েছেন অফিসগামী যাত্রীরা। বৃষ্টি, রাস্তায় পানি, গণপরিবহনে স্থান সঙ্কট সবকিছু মিলিয়ে দিনের শুরুতে এ যেনো এক আকস্মিক ভোগান্তি। কিন্তু কিছুই করার নেই কারো। করোনার সংক্রমণের ফলে গণপরিবহন অর্ধেক যাত্রী বহন করছে। আসন সংখ্যা তাই অর্ধেক। কিন্তু কমেনি অফিসগামী যাত্রীর সংখ্যা। তাই গণপরিবহনে আসন না পেয়ে অধিকাংশ মানুষের শেষ ভরসা রিকসা কিংবা সিএনজি। সেখানেও গুনতে হচ্ছে অস্বাভাবিক বাড়তি ভাড়া। অনেকাংশে তা দ্বিগুণের মতো।

রাজধানীর কল্যাণপুরের রাস্তায় সকালে দেখা যায় জনস্রোত। অফিসগামীদের এই দীর্ঘ অপেক্ষা যেনো দেখার কেউ নেই। যারা যেভাবে পারছেন ছুটছেন গন্তব্যের দিকে। রিকশা, সিএনজি, বাস, মোটরসাইকেল আর না হলে হেঁটে রওনা দিয়েছেন যে যার মতো।

সুমন কবিরের অফিস কাওরান বাজারে। দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেছেন কল্যানপুর বাসস্ট্যান্ডে। কিন্তু কোনো উপায় না পেয়ে শেষ পর্যন্ত অফিসে গিয়েছেন সিএনজিতে। দিয়েছেন প্রায় দ্বিগুণ ভাড়া। তিনি জানান, ধানমন্ডি আর খামারবাড়িতে পানি জমেছে। তাই বিশাল জ্যাম ঠেলে তিনি এসেছেন বিজয়স্মরণী হয়ে।

তেমনি আজিমপুরের বাসিন্দা তানজিব হাসানের অফিস মিরপুর-১০ এ। তাকেও পেরোতে হয়েছে ধানমন্ডি-২৭, শেওড়াপাড়া ও কাজীপাড়ার জলাবদ্ধ রাস্তা। এক ঘণ্টার পথ প্রায় আড়াই ঘণ্টায় পাড়ি দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছান তিনি।

প্রায় একই দৃশ্য রাজধানীর মালিবাগ, বনানী, ধানমন্ডি, গ্রিন রোড, এয়ারপোর্ট রোডসহ বিভিন্ন এলাকায়। বৃষ্টি হলেই এ সব এলাকার দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। পানি নিষ্কাশনের উপায়, খাল ভরাট, অপরিকল্পিত নগরায়নসহ নানা কারণে প্রতিনিয়ত এ পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছে এসব এলাকা। দীর্ঘদিনের এ সমস্যার সমাধান হয়নি এখনো। কবে আর কিভাবে হবে সেটাও যেনো কেউ জানে না।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *