কেজি মাপা দরে অনলাইনে কোরবানির পশু কেনা কী জায়েজ?

বিয়ানীবাজারের ডাক ডেস্কঃ

করোনার সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী ও ‘কঠোর লকডাউনের’ কারণে এবার স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে আমরা অনলাইনে কোরবানির পশু কেনাবেচা করছি। এ ক্ষেত্রে একটি বিষয় আমরা লক্ষ্য করছি, বিক্রেতা তার পশু বিক্রির মূল্যের ন্যায্যতা প্রমাণের জন্য লাইভে ওজন দেখিয়ে দিচ্ছেন।

অনেক ক্ষেত্রে পশুতে কি পরিমান গোস্ত হতে পারে, পশুর দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থ পরিমাপ করে বিশেষ পদ্ধতিতে হিসাব করে সেটা বের করে দেওয়া হচ্ছে।

একজন ক্রেতা যিনি কোরবানি উদ্দেশ্যে পশু কিনবেন তিনি যদি সেই পশুতে কি পরিমাণ গোস্ত হতে পারে সেই হিসাবটা দেখে এবং কেজি প্রতি কত মূল্য দাঁড়ালো সেটা মাথায় রেখে পশু কিনেন তাহলে তার কোরবানি বিশুদ্ধ হবে কিনা আজ আমরা সে বিষয়ে কথা বলবো।

 

আল্লাহ সুবহানাহুতা’লার সন্তুষ্টি পাওয়ার উদ্দ্যেশ্যে ও নির্দেশ পালনের আমরা কোরবানি করে থাকি। এখানে পশুর গোস্ত অথবা অন্য কোনো অংশ আমাদের মুখ্য উদ্দেশ্য হতে পারে না।

আল্লাহ সুবহানাহুতা’লা ইরশাদ করেন, তোমাদের কোরবানি পশুর গোস্ত বা রক্ত কিছুই আমার কাছে পৌঁছায় না তবে, তোমাদের অন্তরে যে তাকওয়া রয়েছে, আল্লাহর ভয় রয়েছে যার ভিত্তিতে তোমরা আল্লাহর নির্দেশ পালনার্থে কোরবানি করে থাকো। সেই তাকওয়া টুকু আল্লাহর কাছে পৌঁছায় এবং জমা হয়।

 

তাকওয়ার আলোকে একজন মোমিন কোরবানি পশুর কি পরিমান গোস্ত তিনি আহরণ করবেন ও তার প্রয়োজন কি পরিমান মেটবে সেটি মাথায় রাখে কিংবা মূল উদ্দেশ্য করে তিনি কখনো কোরবানি করতে পারে না। যদি করেন তাহলে সেটি নিছক গোস্ত আহরণের উৎস হতে পারে কোরবানি হবে না।

বিশ্ব বিখ্যাত ফতোয়ার ওয়েবসাইট মারকাজুল ফতুয়া অথবা ইসলাম ওয়েবে মুফতিরা এ বিষয়ে একটি ফতোয়া দিয়ে নিশ্চিত করেছেন। যদি কোরবানি পশুর কি পরিমান গোস্ত হতে পারে সে হিসাবটা মাথায় রাখে তার মূল্য নির্ধারণ করা হয় এবং এই গোস্তের হিসাবটা করা হয় শুধুমাত্র তার মূল্যের ন্যায্যতা নিশ্চিত করার জন্য তাহলে ইনশআল্লাহ তার কোরবানি হয়ে যাবে। তবে, এভাবে পশু গোস্তের পরিমাণ হিসাব করে বা মাথায় রেখে পশু কেনা, কোরবানির যে উদ্দেশ্য তার সঙ্গে যায় না এবং তা দেখতেও দৃষ্টিকটু।

আমরা মূল্যের ন্যায্যতা নিশ্চিত করার জন্য তার লাইভ ওজন দেখতে পারি বড় জোর ভিডিও ফুটেজ দেখতে পারি বিভিন্নভাবে জানার চেষ্টা করতে পারি এই পশুটার যে মূল্য চাওয়া হচ্ছে তা কতটা ন্যায্য। কারণ তিনি ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার জন্য করেছেন যা তার অধিকার। পশুর গোস্তের পরিমাণ দেখা যদি হয়ে থাকে বিশেষ কোনো কারণে অর্থাৎ একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ গোস্ত তার প্রয়োজন। অনেকে ঈদুল আজাহর পর বিয়েসাদি বা বিভিন্ন অনুষ্ঠান করে থাকেন। এর কারণে তার পশুতে প্রয়োজনীয় গোস্ত হবে কিনা সেটি মাথায় রেখে যদি কোরবানি করেন, তাহলে আল্লাহ মাফ করুক তার কোরবানি বিশুদ্ধ হবে না।  অতএব দামের ন্যায্যতা নিশ্চিত করার জন্য গোস্তের পরিমাপ করা গেলেও তা দৃষ্টিকটু হবে। আল্লাহতা’লা আমাদের সবাইকে সুন্দরতম উপায়ে বিশুদ্ধভাবে কোরবানির এই আমল পালন করার তৌফিক দান করুক। আমিন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *